ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার জেলার চার আসনে ঐক্যফ্রন্টের সভায় প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহবান

জহিরুল ইসলাম, চকরিয়া থেকে :
আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্তি ও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর জেলার চারটি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা ২০ দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জোট নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে জোটভুক্ত দলসমূহের নেতাকর্মীদের নির্বাচনী মাঠে ঝাঁপিয়ে পডার আহ্বন জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনুষ্টিত জেলার ২০ দলীয় জোটের সভা থেকে এ অহবান জানানো হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি, কক্সবাজার-৪ (উখিয়া টেকনাফ) আসনে জোট মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীআলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী ওই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন।
এতে সিদ্ধান্ত হয় দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সভায় জোট নেতারা কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে এডভোকেট হাসিনা আহমদ-ধানের শীষ, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) হামিদুর রহমান আযাদ-আপেল, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে লুৎফুর রহমান কাজল-ধানের শীষ ও কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে শাহজাহান চৌধুরী-ধানের শীষকে বিজয় করার জন্য জেলার বিএনপিসহ ২৩ দলের সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন।
জোট নেতৃবৃন্দরা বলেন, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী ও কুতুবদিয়া) আসনে বিএনপি বা খালাদা জিয়ার প্রার্থী জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আজাদ। যাকে জিতিয়ে আনার জন্য বিএনপিকে মাটে ময়দানে সবচেয়ে বেশি ত্যাগী হতে হবে।
বৈঠকে বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও কক্সবাজার সদর-রামু আসনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী লুৎফুর রহমান কাজল, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য ও শহর সেক্রেটারী আব্দুল্লাহ আল ফারুখ, মহেশখালী উপজেলা জামায়াতের আমির জাকের হোসেন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কলেজ বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আছাদুল্লাহ গালিব, কক্সবাজার জেলা শিবির সভাপতি রবিউলসহ জোট নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সকল ষড়যন্ত্র, মামলা, হামলা মোকাবেলা করে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জেলার ০৪টি আসনে ২০দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদেরকে বিজয়ী করার জন্য জোটের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ২০দলীয় জোটের পক্ষে সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার জেলার ০৪টি আসনেও ব্যাপক গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে সর্বত্র আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনী নির্বাচনী প্রচারনার সময় আমাদের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের উপর হামলা করছে। ইতিমধ্যে অন্যায়ভাবে উখিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, চকরিয়া থেকে উপজেলা যুবদল সভাপতি ইব্রাহীম খলিল কাকন, কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোছাইন, ঈদগাঁও বি.এন.পি’র সাধারণ সম্পাদক শওকত আলম, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সরওয়ার কামাল সিকদারসহ সমগ্র জেলায় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সভায় বে-আইনিভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে তাদেরকে মুক্তির জোর দাবি জানান এবং পুলিশ বাহিনীকে দলীয় কর্মীর ভূমিকা না রেখে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহবান জানান।
সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনে কারাবন্দি হামিদুর রহমান আযাদ-ই ২০দল সমর্থিত প্রার্থী। আইনি জটিলতার কারণে তিনি ধানের শীষের পরিবর্তে স্বতন্ত্র প্রতীক আপেল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। সুতরাং ২০দলের সকল নেতাকর্মীকে কক্সবাজার-১, ৩ ও ৪নং আসনে ধানের শীষ এবং কক্সবাজার-২ আসনে আপেল প্রতীককে বিজয় করার জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় বিএনপিসহ ২০দলের সকল নেতাকর্মীদেরকে বিভ্রান্ত না হয়ে কারাবন্দী হামিদুর রহমান আযাদের পক্ষে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিন্ড তৈরী করার জন্য প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলীয় কর্মীর ভূমিকার উর্দ্ধে উঠে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। ভোটারদের ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে সকল বাধা দূর করতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় ২০দল জনগণকে সাথে নিয়ে মানুষের ভোটাধিকার বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

পাঠকের মতামত: